ভারতের উত্তর প্রদেশে নিজের জীবন দিয়ে বাঘের কবল থেকে মনিবকে রক্ষা করেছে ‘জকি’ নামের একটি গৃহপালিত নেড়ি কুকুর।
ঘটনার বিষয়ে মনিব গুরদেভ সিং বলেন, ‘প্রতিদিন মাত্র কয়েকটা রুটি খেতে দিতাম জকিকে। তার বিনিময়ে ও যে নিজের প্রাণ দিয়ে আমার জীবন বাঁচাবে, এটা অবিশ্বাস্য! মানুষের শেখা উচিত এদের দেখে।’
জানা গেছে, রাজ্যের শাহাজানপুরের কাছে দুধুয়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া এক গ্রামের কৃষক গুরদেভ সিং-এর পোষা কুকুর এই ঘটনার নায়ক।
দিন-কয়েক আগে প্রচণ্ড গরমের কারণে বাড়ির বাইরে খাটিয়া পেতে ঘুমোচ্ছিলেন গুরদেভ। তার পাশেই শুয়েছিল পোষা নেড়ি কুকুর- জকি।
হঠাৎই জাতীয় উদ্যানের দিক থেকে একটি বাঘের গর্জন শোনা যায়। তখন জকি চেষ্টা করতে থাকে তার মনিবকে ডেকে তুলতে, যাতে তিনি বাঘের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারেন।
কিন্তু গুরদেভ সিংয়ের ঘুম এতই গভীর ছিল সেইরাতে, যে বাঘের গর্জন আর কানের পাশে পোষা কুকুরের চিৎকারেও তার ঘুম ভাঙেনি। আর ততোক্ষণে বাঘটি খুব কাছে চলে এসেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো খবরে জানানো হয়েছে, মনিবের যখন শেষমেশ ঘুম ভাঙে, তখন বাঘটা একেবারে সামনে।
ঘুমের ঘোর কাটিয়ে গুরদেভ যখন একটা মোটা লাঠি হাতে তুলে নিয়েছেন, ততোক্ষণে জকি নিজেই এগিয়ে গেছে বাঘের মোকাবিলা করতে।
ছোট্ট কুকুরকে প্রথমে পাত্তাই দিতে চায়নি বাঘটি, তার টার্গেট সামনে থাকা গুরদেভ। কিন্তু জকির একরোখা মনোভাব দেখে তাকেই প্রথমে খতম করে বাঘটি, তারপর তার ঘাড়ের কাছে কামড়ে ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে জঙ্গলের দিকে।
গুরদেভ আর তার প্রতিবেশীরা অনেকক্ষণের চেষ্টায় কিছুটা দূরের জঙ্গলে জকির মৃতদেহ খুঁজে পান।
জকির বিষয়ে মনিব গুরদেভ সিং বলেন, বছর চারেক আগে রাস্তা থেকেই ছোট্ট কুকুরটিকে নিয়ে এসেছিল তার সন্তানেরা। প্রতিদিন তাদের স্কুল পর্যন্ত এগিয়ে দিতেও যেত জকি।
তাকে হারানোর শোকে একদিন খাওয়া-দাওয়া করেনি গুরদেভের ছেলে-মেয়ে।সূত্র: বিবিসি বাংলা
Leave a Reply